নিশীথের শেষ
"আমাকে একটি কথা দাও যা আকাশের মতো
সহজ মহৎ বিশাল,
গভীর; – সমস্ত ক্লান্ত হতাহত গৃহবলিভুকদের রক্তে
মলিন ইতিহাসের অন্তর ধুয়ে চেনা হাতের মতন,
আমি যাকে আবহমান কাল ভালোবেসে এসেছি সেই নারীর।"
নিশীথ তুমি তো একলা হলে অনেকদিন হলো, দেবদারু গাছের মতো, এখনও কান পাতলে তার শেষ পাতা বা মূলের ওই বিচ্ছিন্নতার একটানা শব্দ শোনা যায়। শোনা যাওয়াটা শ্রোতার এক পরাধীন কর্তব্যের মতো, নিশীথ যেদিন থেকে এই নিঃসীম সন্ধ্যাকে তার তরলতায় সমর্পণ করেছে সেদিনের সেই প্রাচীনতা আজ সেরকমই বড়ই একমুখী - তোমার যত্নে আলগা হয়ে থাকে রাত্রির ঘুম পর্যন্ত। নিশীথ তুমি তো জানোই যে এই বিষণ্ণতার, এই একেলা নিজেকে সঁপে দেবার মধ্যে কোনোরকম সম্বর্ধনা বা বীরত্ব প্রদর্শন নেই, তুমি তো জেনেছো যে সন্ধ্যেবেলা মানেই মিছে স্বপ্ন দেখা, এ এক মানব ইতিহাসের সত্যের মতো, প্রেমের মতো, অহংকারের মতো সত্য, তবু তুমি ডুবে যেতে যেতে ভাবলে না কোনোদিন, যে এই তো মহত্তর নিয়ম, এই সমস্ত পাহাড়ের ওপারে সূর্য ওঠে প্রতি ভোরবেলায়, এই সমস্ত স্বপ্নের শেষ আছে, তবু এর গভীরতায় একটা একটা করে দিন অনেক সহজে কাটে, অনেক অতীতের প্রলাপ নিয়ে কাটে - প্রতি প্রজন্ম তার মায়ের চোখের মতো সজল, তার নিয়তির মতো - কারণ মায়ের তো আরেক নাম নিয়তি, কারণ অনেক সময় এক মুহূর্তেই ফের সন্ধ্যা নেমে আসে।
Comments
Post a Comment